বোরকা পরে ক্লাসে আসায় ছাত্রীদের পৃথক বসানোর অভিযোগ

সময় ট্রিবিউন | ৩০ জুলাই ২০২২, ০০:২৯

সংগৃহীত

পঞ্চগড়ে বোরকা পরে শ্রেণিকক্ষে আসা ছাত্রীদেরকে পিছনের বেঞ্চে পৃথক করে বসতে দিয়েছেন বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক। এতে ভুক্তভোগী ছাত্রীদের অভিভাবক ও স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

গত ২৫ জুলাই পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার সাকোয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজে ঘটনাটি ঘটে। গতকাল বৃহস্পতিবার ওই বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির তিনজন ছাত্রী অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রধান শিক্ষক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন। 

এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ছাত্রীদের অভিভাবক স্কুলে আসলে হট্টগোল সৃষ্টি হয়। এ সময় খবর পেয়ে বিদ্যালয়টির সভাপতি ও সাকোয়া ইউপি চেয়ারম্যান হাফিজুল ইসলাম স্কুলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগে জানা যায়, গত ২৫ জুলাই বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আশরাফুল আলম নবম ও দশম শ্রেণির ছাত্রীদের ক্লাস নেন। ক্লাস চলাকালীন সময়ে আশরাফুল আলম বোরকা পরিহিত ছাত্রীদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। এ সময় বোরকার সঙ্গে হিজাব পরিধান করা ছাত্রীদের বলেন বোরকা গায়ে জড়িয়ে ক্লাসে আসার দরকার নেই। আমি যাকে চিনি না, মুখ দেখতে পারি না, তাদের ক্লাস আমি নেই না। এসব মেয়েরা আমার ছাত্রী হতে পারে না। আমার ক্লাসের ছাত্রী হতে হলে চোখ-মুখ খোলা রাখতে হবে। এক পর্যায়ে বোরকা পরিহিত ছাত্রীদের আলাদাভাবে পিছনের বেঞ্চে বসার নির্দেশ দেন।

এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে সহকারী প্রধান শিক্ষক আশরাফুল আলম জানান, প্রধান শিক্ষক চক্রান্ত করে ছাত্রীদের দিয়ে এমন অভিযোগ করিয়েছেন। কারণ, প্রধান শিক্ষক আমার কাছে প্রায় সময় টাকা ও মোবাইল দাবি করেন। ছাত্রীদের পৃথক করে দেওয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি। ঘটনার দিন আমি দশম শ্রেণিতে রসায়ন ক্লাস নিতে গিয়ে দেখলাম তিনজন ছাত্রী একই রকম বোরকার সঙ্গে স্কার্ভ পরে পুরো মুখ ঢেকে শ্রেণিকক্ষে অবস্থান করছেন। ঠিক তখন আমি বললাম আসলে আমি তো তোমাদের চিনতে পারছি না। কার কি নামও বলতে পারছি না। কীভাবে পড়া বুঝিয়ে দেব। এ সময় একজন ক্লাসের দিকে মনোযোগ না দিয়ে পিছনে তাকিয়েছিল এজন্য ওই ছাত্রীকে মনোযোগ আকর্ষণের জন্য আমি সামনে আসতে বলেছি। তাদের সঙ্গে কোনো অসৌজন্যমূলক আচরণ করিনি। আমি বাম রাজনীতির সঙ্গে জড়িত এজন্য রাজনৈতিকভাবে হেয় করার জন্য এই চক্রান্ত হতে পারে।

সাকোয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক মঞ্জুরুল হাসান সুজা জানান, দশম শ্রেণির তিনজন ছাত্রী লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। আগামী রোববার এ বিষয়ে গভর্নিং কমিটির সভা আহ্বান করা হয়েছে। সেখানেই অভিযুক্ত শিক্ষকের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। 

 


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: