হাবিপ্রবির ফুড সায়েন্স এন্ড নিউট্রিশন বিভাগের প্রথম অধ্যাপক ড. রুবেল মজুমদার

মশিউর রহমান, হাবিপ্রবি সংবাদদাতা | ৭ জুলাই ২০২২, ০৬:২২

সংগৃহীত

উত্তরবঙ্গের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (হাবিপ্রবি) এর ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ফুড সায়েন্স এন্ড নিউট্রিশন (এফএসএন) বিভাগ চালুর ১৭ বছরে প্রথম অধ্যাপক হয়েছেন অধ্যাপক ড. এন. এইচ. এম. রুবেল মজুমদার।

সম্প্রতি ৫১ তম রিজেন্ট বোর্ড সভায় ড. এন. এইচ. এম রুবেল. মজুমদার সহযোগী অধ্যাপক থেকে অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি পেয়েছেন। তিনি ২০১০ সালের ১৭ মে হাবিপ্রবিতে ফুড সায়েন্স এন্ড নিউট্রিশন বিভাগে প্রভাষক পদে যোগদান করেন। এরপর ২০১২ সালে সহকারী অধ্যাপক ও ২০১৮ সালে সহযোগী অধ্যাপকে পদোন্নতি পান। ২০২০ সালের ১২ অক্টোবর থেকে এই বিভাগের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।

২০০২ সালে চালু হওয়া হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (হাবিপ্রবি) এ ২০০৫ সালে ফুড সায়েন্স এন্ড নিউট্রিশন সহ আরো তিনটি বিভাগ নিয়ে চালু হয় তৎকালীন অ্যাগ্রো-ইন্ডাস্ট্রিয়াল এন্ড ফুড প্রসেস ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদ। বর্তমানে এটি আরো বিভাগের সংযুক্তিতে ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদ নামে পরিচিত এবং তিনটি বিভাগের সমন্বিত ফুড এন্ড প্রসেস ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রির অন্যতম একটি বিভাগ ফুড সায়েন্স এন্ড নিউট্রিশন। ২০০৫ সালে এই বিভাগের পথচলা শুরু হয়ে দেখতে দেখতে কোনো অধ্যাপক ছাড়াই ১৭ বছর হয়ে গেছে। ড. এন. এইচ. এম. রুবেল মজুমদার এই বিভাগের প্রথম অধ্যাপক আরো রয়েছেন ২ জন সহযোগী অধ্যাপক ও ২ জন সহকারী অধ্যাপক। এই বিভাগে স্বতন্ত্রভাবে স্নাতকোত্তর করার সুযোগ রয়েছে।

অধ্যাপক ড. এন. এইচ. এম. রুবেল মজুমদার উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি অবশ্যই শিক্ষকতার জীবনে সবচেয়ে বড় অর্জন। পাশাপাশি, দায়িত্ব ও কর্তব্যের বিশালতায় শিক্ষার্থীদের পাঠদান এবং গবেষণায় আরো কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের গুণগত শিক্ষার মান উন্নয়নে মাননীয় উপাচার্য ও ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদকে আমার জ্ঞান ও দক্ষতা দিয়ে সর্বাত্মক সহযোগীতা করার চেষ্টা করবো সেই সাথে তাদের সহযোগিতায় এফএসএন বিভাগকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়।

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, দেশে এখন পুস্টি ও খাদ্য বিজ্ঞানে ডিগ্রী অর্জনে অনেক সুযোগের সৃষ্টি হয়েছে। ডিগ্রীর পাশাপাশি দেশে কাজ করার অনেক ক্ষেত্রও তৈরি হয়েছে। তাই শিক্ষার্থীদের এ বিষয়ে হাতেকলমে পাঠদানের মাধ্যমে দক্ষ মানবসম্পদ করে গড়ে তুলার চেষ্টা করবো যাতে তারা গবেষণার সাথে সাথে উন্নত ক্যারিয়ার গড়তে পারে। হাবিপ্রবিতে শিক্ষার্থীদের ফুড সায়েন্স এন্ড নিউট্রিশন এ আরো দক্ষ করতে এই বিভাগে একক ভাবে স্নাতক চালুর ভবিষ্যত পরিকল্পনার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।

১৭ বছরেও কেন এই বিভাগ কোনো অধ্যাপক পায় নি এই বিষয়ে বিভাগীয় চেয়ারম্যান হিসেবে তিনি বলেন, ফুড সায়েন্স এন্ড নিউট্রিশন বিভাগ হাবিপ্রবিতে প্রায় নতুন একটি বিভাগ যদি আমরা তা ঢাবির পুস্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট এর সাথে তুলনা করি যার যাত্রা শুরু হয়েছিল ৬০ দশকে কিন্তু অনার্স কোর্স শুরু হয়েছিল ৯৮ সালে। আর হাবিপ্রবিতে এর যাত্রা ২০০৫ সালে তাও একটি সমন্বিত ডিগ্রীর সাথে। ফলে, বিষয়ভিত্তিক অধ্যাপক তৈরি হতে সময়ের প্রয়োজন পাশাপাশি হাবিপ্রবিতে এসে যোগদানের মতো শিক্ষক পাওয়া অনেক সময় সম্ভব হয় না। এছাড়াও শিক্ষকের বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী না হওয়া ও অন্যতম কারণ বলে মনে করি।

অধ্যাপক ড. এন. এইচ. এম. রুবেল মজুমদার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইন্সটিটিউট থেকে ২০০৮ সালে স্নাতক (সম্মান) এবং ২০০৯ সালে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে তিনি উচ্চ শিক্ষা নিতে ২০১২ সালে বৃত্তি নিয়ে বেলজিয়ামে পাড়ি জমান। সেখানকার গেন্ট ইউনিভার্সিটি থেকে নিউট্রিশন এন্ড রুরাল ডেভলপমেন্ট: হিউম্যান নিউট্রিশন মেজরিং পাবলিক হেলথ বিষয়ে ২০১৪ সালে অ্যাডভান্স মাস্টার্স সম্পন্ন করেন । এরপর ২০১৬ সালে কোরিয়ান সরকারি বৃত্তি নিয়ে যান দক্ষিণ কোরিয়ায়। সেখানে ২০২০ সালে চননাম ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে ফুড এন্ড নিউট্রিশন (মেটাবলোমিক্স) এর উপর পিএইচডি সম্পন্ন করেন।

বর্তমানে তিনি চা সহ বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্যের মেটাবলিমিক্স, বাংলাদেশের খাদ্য ও পুস্টি নিরাপত্তাসহ কমিউনিটি নিউট্রিশন এর উপর গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন। সাথে সাথে তার নিজ দায়িত্বের অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে হাবিপ্রবির ক্যারিয়ার অ্যাডভাইজারি সার্ভিসের পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন।


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: