-2022-06-20-13-22-18.jpg)
সিলেটের স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় পাঁচদিন ধরে আটকে আছেন কয়েক লাখ মানুষ। অধিকাংশ ভবনের নিচতলা পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় দুই ও তিনতলায় আশ্রয় নিয়েছেন অনেকে। এ অবস্থায় ভয়াবহ বিপর্যয়ে পড়েছেন সিলেটের প্রায় ২০ লক্ষাধিক মানুষ। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে থাকা প্রায় আড়াই লাখ মানুষ রয়েছেন তীব্র খাবার সংকটে।
এখনো মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রের খোঁজে আছে। সেনাবাহিনী তাদের উদ্ধার ও ত্রাণ বিতরণ এবং চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছে। তবে তা প্রয়োজনের চেয়ে অপ্রতুল।
এর মধ্যে নেই বিদ্যুৎ, মুঠোফোনগুলো বন্ধ। এমন ভুতুড়ে পরিস্থিতিতে মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। প্রায় ৫০০ আশ্রয়কেন্দ্রে খাদ্য সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। সরকারি ও বেসরকারীভাবে দেওয়া ত্রাণ অপ্রতুল বলছেন বন্যাদুর্গতরা। খাদ্য সংকটে অভুক্ত রয়েছে আশ্রয় কেন্দ্রে রাখা ৩১ হাজার গৃহপালিত পশুও।
এদিকে বন্যার পানি তেমন কমছে না। গতকাল সন্ধ্যা ৬টা থেকে আজ সকাল ৬টা পর্যন্ত সুরমা নদীর সিলেট সদর পয়েন্টে পানি কমেছে মাত্র দশমিক ১ সেন্টিমিটার। আর একই সময়ে সিলেটের জকিগঞ্জের অমলসীদ পয়েন্ট কুশিয়ারা নদীর পানি বেড়েছে দশমিক ৯ সেন্টিমিটার। বন্যা পরিস্থিতির কোনো উন্নতি না হওয়ায় আতঙ্কে আছেন লোকজন। এছাড়া নগরের ফাঁকা বাসাবাড়িতে চুরি ও ডাকাতি বেড়েছে।
এমন অবস্থায় নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটছেন নগরের বাসিন্দারা। এখন আর নগরে কোনো আশ্রয়কেন্দ্র খালি নেই। সবজায়গায় লোকজনে টই-টম্বুর। এছাড়া বিভিন্ন উপজেলায় বন্যাদুর্গতরা চাইলেই আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে পারছেন না। অতিরিক্ত পানি থাকায় তারা বাসাবাড়ির সিঁড়িতে এমনকি বাসার ছাদেও ত্রি-পল টানিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, টানা বৃষ্টি ও জমে থাকা বন্যার পানির কারণে ঘর থেকে বের হওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। যাতায়াত ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়ায় ত্রাণ কার্যক্রমও খুব একটা দেখা যাচ্ছে না। অনেকের ঘরে চাল-সবজি থাকলেও সেগুলো রান্না করে খাওয়ার মতো ব্যবস্থা নেই। বেশিরভাগ ঘরবাড়িতে পানির কারণে আগুন জ্বালানের ন্যূনতম সুযোগও নেই।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ১ নম্বর ইসলামপুর পশ্চিম ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শাহ মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, খাদ্যের জন্য মানুষের হাহাকার দেখলে কষ্ট লাগে। আমাদের এখন আর কিছু করার নেই। আমি নিজেও বন্যায় আক্রান্ত। এছাড়া দোকানপাট বন্ধ থাকায় শুকনো খাবারও কেনা যাচ্ছে না। গৃহপালিত পশু নিয়েও মানুষ বিপদে আছেন। গোখাদ্যের খুবই অভাব। মানুষ-পশু সবাই খাদ্য সংকটে আছি। সেনাবাহিনীর সদস্যরা এলাকায় ত্রাণ সহয়তা দিলেও তা পর্যাপ্ত নয়। এখন আল্লাহ ছাড়া আর কোনো উপায় নেই
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: