বৃষ্টির জন্য মোংলায় বিশেষ নামাজ আদায়

আলী আজীম, মোংলা (বাগেরহাট) | ১৫ জুন ২০২২, ২০:৫৪

সংগৃহীত

চলমান দাবদাহে বৃষ্টি না হওয়ায় মোংলার জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। প্রচণ্ড খরতাপে পুড়ছে জনজীবন, নেমে আসে চরম দুর্ভোগ। 

রোদ আর গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। গ্রামীণ জনপদের পুকুর ও ডোবায় পানি শুকিয়ে দেখা দিয়েছে মারাত্মক পানি সংকট। এছাড়াও কোথাও কোথাও নলকূপের পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় বিশুদ্ধ পানি উত্তোলন করা যাচ্ছে না। জৈষ্ঠ পেরিয়ে আষাড়ে পা দিলেও নেই বৃষ্টির দেখা। বৃষ্টি না হওয়ার কারণে নষ্ট হচ্ছে ফসল। নেমে গেছে পানির স্তর। দেখা দিয়েছে পানির তীব্র সংকট। মোংলায় সুপেয় পানির জন্য একমাত্র পানির প্রকল্পের পুকুরটিও শুকিয়ে চৌচির।

তাই এ অনাবৃষ্টি থেকে রক্ষা পেতে মোংলা উপজেলা ইমাম পরিষদের আয়োজনে বিশেষ নামাজ আদায় করেছেন মোংলা পৌরবাসী। 

বুধবার (১৫ জুন) সকাল ৮টায় বৃষ্টির জন্য মোংলার কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে বিশেষ নামাজ (সালাতুল ইস্তেখারা) আদায় করেছেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। নামাজ শেষে হাজারো মুসল্লি অংশ নিয়ে আল্লাহর কাছে বৃষ্টির জন্য বিশেষ প্রার্থনা করে কান্নাকাটি করেন।

নামাজ শেষে অনাবৃষ্টি থেকে মুক্তির জন্য মহান আল্লাহর রহমত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন মোংলা ইমাম পরিষদের সভাপতি, বিএলএস জামে মসজিদের পেশ ইমাম ও খতিব মাও: মোঃ রেজাউল করিম।

নামাজে অংশগ্রহণকারীরা জানান, অনাবৃষ্টিতে সম্ভব হচ্ছে না ফসল উৎপাদন। প্রচণ্ড গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে এখানকার জনজীবন। এমন দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পেতে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য এ নামাজ আদায় করা হয়।

সৌদি আরবে রহমতের বৃষ্টির জন্য প্রতি বছরই একাধিকবার ইসতিসকার নামাজ পড়া হয়। বিশেষ করে যখনই অনাবৃষ্টি প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ বেড়ে যায় তখনই নামাজে ইসতিসকা আদায় করা হয়। ইসতিসকার সালাত আদায় করা নফল ইবাদত। তবে মহামারি বা দুর্যোগ এলে এই সালাতের গুরুত্ব অনেক। 

একনিষ্ঠ তাওবা করা অর্থাৎ তাওবাতুন নসুহার মাধ্যমে আল্লাহর কাছে রহমতের বৃষ্টি কামনা করে অতিরিক্ত ১২ তাকবিরের মাধ্যমে ২ রাকায়াত সুন্নত নামাজ আদায় করার মাধ্যমে আল্লাহর কাছে বৃষ্টি প্রার্থনা করা হয়েছে। এই নামাজে কোনো আজান বা ইকামত নেই। তবে জামায়াতের সঙ্গে আদায় করতে হয়। 

নামাজের আগে মোংলা পোর্ট পৌরসভার মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আঃ রহমান সকলের উদ্যেশ্য মহান আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনার আবেদন করেন।

এ বিষয়ে মাও: রেজাউল করিম বলেন,দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়ায় মানুষ পানির জন্য খুব বিপদে আছে। বৃষ্টি না হওয়ায় তাপপ্রবাহে দেশের মানুষের বিপদ-আপদ ও দুঃখ-কষ্ট হতে থাকলে, প্রয়োজন পূরণের জন্য আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করা সুন্নত। একেই আরবিতে বলা হয় 'ইসতিসকা' অর্থাৎ পানি প্রার্থনা করা।

হাদিস শরিফে বর্ণিত আছে- রাসুলুল্লাহ (সা.) বৃষ্টি প্রার্থনার সময় বলতেন, ‘হে আল্লাহ! তুমি তোমার বান্দাকে এবং তোমার পশুদের পানি দান করো। আর তাদের প্রতি তোমার রহমত বর্ষণ করো এবং তোমার মৃত জমিনকে জীবিত করো।’


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: