‘দত্ত সীড এন্ড নার্সারি’র বীজ লাগিয়ে ফরিদপুরের মধুখালীতে তরমুজ চাষীরা ক্ষতির মুখে

এহসান রানা, ফরিদপুর প্রতিনিধি | ১৮ এপ্রিল ২০২২, ০২:১৯

ফাইল ছবি

ফরিদপুরের মধুখালীতে চলতি মৌসুমে ‘দত্ত সীড এন্ড নার্সারি’র তরমুজের বীজ লাগিয়ে ঊপজেলার প্রায় ২০ জন চাষী বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছেন। স্থানীয় তরমুজ চাষীদের সুত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে পাকিজা এ.আর. মালিক সীড হাইব্রীড জাতের তরমুজ বীজ ফরিদপুর ‘দত্ত সীড এন্ড নার্সারি’ হতে তরমুজের বীজ ক্রয় করে উপজেলার মধুখালী পৌরসভার মহিষাপুর গ্রামের আলী আকবার শেখ ৫০ শতক, হরিপদ ভৌমিক ৬০ শতক, আমিরুল ইসলাম ৪০ শতক, ছরোয়ার হোসেন ৪০ শতক, রাকিবুল ইসলাম ৪০ শতক, মেতালেব গাজি ৩০ শতক, সাহেব আলী ৩০ শতক, আলম সেখ ২৫ শতক ও ফরিদ, জিয়ারত, কোবাদ মিলে ৫০ শতক জমিতে লাভের আশায় তরমুজ বীজ লাগিয়ে বড় ধরনের ক্ষতির পড়েছেন।

তরমুজ চাষী আলী আকবার শেখ জানান, দত্ত সীড এন্ড নার্সারি থেকে এ এলাকায় এসে কৃষকদের উৎসাহিত করে বলা হয়েছিল আপনার এ.আর মালিক সীড হাইব্রীড তরমুজ লাগালে ২০ শতক জমিতে ৩ লক্ষ টাকার তরমুজ বিক্রি করতে পারবেন। এ জাতের প্রতিটা তরমুজ হবে ১২ থেকে ১৪ কেজি ওজনের। এ রকম বড় ধরনের লাভের আশায় মধুখালী পৌরসভার মহিষাপুর গ্রামের প্রায় ২০ জন চাষী ফরিদপুর দত্ত সীড এন্ড নার্সারি হতে প্রায় ৬০ হাজার টাকার তরমুজ বীজ ক্রয় করে জমিতে রোপন করেন। পরে জমিতে জৈব সার, রাসায়নিক সার ও সময়মত সেচ দিলে তরমুজের গাছগুলো বাড়তে থাকে। কিন্তু ফল ধরে না। চাষী ছরোয়ার হোসেন জানান, আমাদের সাথে প্রতারণা করা হয়েছে। জমিতে গাছ লতার মতো ছড়িয়ে গেছে কিন্তু ফল ধরে নাই। এ জমিতে অন্য ফসল ফলালেও লক্ষাধিক টাকার ফসল হতো। তরমুজ লাগিয়ে ক্ষতি হয়েছে। এ ঘটনায় তরমুজ চাষীরা একাধিক বার বিক্রয়কারী বীজ ভান্ডারে যোগাযোগ করলে সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেনি বীজ বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান। চাষীরা জানতে পারে পুরানো বীজ বিক্রি করে ফায়দা লুটে নিয়েছে ‘দত্ত সীড এন্ড নার্সারি’।

সরেজমিনে মহিষাপুর মাঠে তরমুজের খেতে গিয়ে দেখা যায়, মাঠ ভরা জমিতে তরমুজের গাছ ছেয়ে গেছে কিন্তু কোন ফল ধরেনি। এখন গাছের বয়স হওয়ায় গাছগুলো মরে যাবার উপক্রম হচ্ছে।এ ব্যাপারে দত্ত সীড এন্ড নার্সারিতে মোবাইলে যোগাযোগ করলে তারা কোন সদুত্তর দিতে পারেনি। বলা হয় বীজ ভালোই ছিল কিন্তু কেন ফল ধরলো না এ ব্যাপারে কিছু বলতে পারবো না।

এ বিষয়ে ফরিদপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আলভীর রহমান জানান, বীজটি যদি বাইরের দেশের হয় তাহলে আমাদের অঞ্চলের তাপমাত্রায় সেটি ফল দিতে নাও পারে। আরেকটি বিষয় হচ্ছে যদি রোপন দেরিতে করা হয় তাহলে এ সমস্যা হতে পারে আবার সারের পরিমান বেশী হলেও এমনটি হতে পারে। আমরা পরীক্ষা মুলক কামারখালী ইউনিয়নের চরে চাষের চেষ্টা করছি।বর্তমান এ তরমুজ গাছে ফল ধরবে এ আশা ক্ষীণ হলেও পরিমাণে কম। লাভের আশার করা যায় না। ভুক্তভোগী চাষীরা সংশ্লিষ্ট বীজ বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানের শাস্তি দাবী করেছেন।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: