অপরিকল্পিত ব্যয়ে অর্থ সংকটে কুবি 

কুবি প্রতিনিধি | ২৮ মে ২০২২, ২০:২৫

সংগৃহীত

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে অত্যধিক ব্যয়ের কারণে বিভিন্ন দিবস ও কর্মসূচি কেন্দ্রিক বরাদ্দকৃত বাজেটে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। ফলে ২৮ মে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপনের আয়োজনেও কাঁটছাট করতে হয়েছে কর্মসূচি।

অর্থ দপ্তরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত জুলাই মাসে শুরু হওয়া চলতি অর্থ বছরে (২০২১-২২) দিবস উদযাপন সংক্রান্ত খাতে বরাদ্দ ছিলো ৮লক্ষ টাকা। অর্থ বছরের প্রথম ৭মাসে তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমরান কবির চৌধুরী দায়িত্বে থাকাকালে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বরাদ্দকৃত অর্থের ৭লক্ষ ২১ হাজার ৭৫২ টাকা খরচ নানা অনুষ্ঠানে খরচ করে ফেলে। ফলে বছরের বাকি ৫মাসের জন্য অবশিষ্ট থাকে মাত্র ৭৮ হাজার ২৪৮ টাকা।

এর মধ্যে গত বছরের ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে ২১ হাজার ৮৬৮ টাকা, শেখ রাসেল দিবসে ১৩, ৯৫২ টাকা, ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবি দিবসে ৪হাজার ৯১৩টাকা, ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে ৪ লাখ ৮৫ হাজার ৫০৯ টাকা, শপথ অনুষ্ঠান প্রচারে ৭ হাজার ২১৭ টাকা, বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে ৮ হাজার ২৯৩ টাকা,

একটি সাংস্কৃতিক সংগঠনকে ৫ হাজার টাকা, বিভিন্ন সমিতির আনন্দভ্রমণে ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা ব্যয় করা হয়। 

পরবর্তীতে এ বছরের জানুয়ারি মাসের ৩১ তারিখ বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তারপর সাবেক উপাচার্যের আমলের অত্যধিক ব্যয়ের কারণে পরবর্তী ৫মাসের ব্যয় নির্বাহের অর্থের ঘাটতি দেখা দেয়। যার প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন আরও ৪লাখ টাকা বর্ধিত বাজেট বরাদ্দের অনুমোদন দেয়।

যার মধ্যে ২৬মে এর পূর্ব পর্যন্ত বিভিন্ন দিবস ও খাতে ৪লক্ষ ৭২ হাজার ৬৩২ টাকা খরচ করার পর অবশিষ্ট থাকে ৫হাজার ৬১৬টাকা। 

এর মধ্যে স্বরস্বতী পূজা উদযাপনে ২৫ হাজার টাকা, ২১ ফেব্রুয়ারি ভাষা দিবসে ২৯ হাজার ২৮১ টাকা, ১৭ মার্চ অনুষ্ঠানে ৯৫ হাজার ৯১০ টাকা, ২৬ মার্চ অনুষ্ঠানে ১ লাখ ৮১ হাজার ৬৩১ টাকা, নবীন বরণে ১ লক্ষ টাকা, পহেলা বৈশাখে ৩২ হাজার ৮১০ টাকা, নাট্য কর্মশালায় ৮ হাজার টাকা ব্যয় করা হয়। 

অর্থ সংকটের বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থ হিসাব দপ্তরের উপ পরিচালক মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় ১৪ ও ১৬ ডিসেম্বরের খরচ বেশি হয়েছে৷ এছাড়া শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী সমিতিকে এই খাত থেকে এবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, নাহয় অর্থ সংকট হয়তো হতো না। 

এ প্রসঙ্গে ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামান বলেন, এই অর্থ বছরের প্রথম ছয় মাসে দূরদর্শীতার অভাবে অপরিকল্পিত ব্যয় হওয়ায় বছরের শেষে এসে অর্থ সংকট সৃষ্টি হয়েছে৷ বছরের শুরুতেই যদি গুরুত্বপূর্ণ দিবসগুলো বিবেচনায় এনে গুছিয়ে পরিকল্পনা করা হতো তাহলে আরও সুন্দরভাবে অনুষ্ঠানগুলো করা যেত, এই অর্থ সংকটও হতো না। তবে আমার জানামতে, মাননীয় উপাচার্য স‍্যার বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা বিবেচনায় এনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি রক্ষার্থে যথাসম্ভব সংক্ষিপ্ত পরিসরে সুন্দর ভাবে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপনের জন্য একটি কমিটি গঠন করে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছিলেন।


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: