জাবি ভিসির দুর্নীতির সব তথ্য প্রমাণ আছে : রাব্বানী

মান্নান, জাবি প্রতিনিধি | ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২২, ০৭:০১

ছবিঃ সংগৃহীত

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম ও তার পরিবারের দুর্নীতির সব তথ্য প্রমাণ আছে বলে দাবী করছেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী।

শনিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে এ দাবী করছেন তিনি। রাব্বানী বলেন, ভিসি ম্যাম ও তার পরিবারের দুর্নীতির তথ্য শুধু আমার কাছে নয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কাছেও আছে। এসব তথ্য তদন্তকারীদের কাছে সরবরাহ করা হয়েছে। এসব তথ্য থাকা সত্ত্বেও দুদক, ইউজিসি ও শিক্ষা মান্ত্রনালয়ের চরম নিষ্ক্রিয়তা দুর্নীতিকে আরো প্রশ্রয় দেওয়ার সামিল।

তিনি আরো বলেন, ঘুমন্ত মানুষকে জাগানো যায় কিন্তু জেগে ঘুমের ভান ধরে থাকা কাউকে জাগানো কঠিন। দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের কাজির গরু কিতাবে আছে, গোয়ালে নেই।
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পে উপাচার্য ছাত্রলীগ কে ইদ সালামীর নামে দুই কোটি টাকা দেন বলে অভিযোগ উঠে। এ ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে পরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। এক পর্যায়ে চাদাবাজীর অভিযোগে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি ও সেক্রেটারী শোভন-রাব্বানী কে পদত্যাগ করতে হয়।

প্রসঙ্গত, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের বিরুদ্ধে এতো এতো অভিযোগ রয়েছে। যা ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে 'দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর' এর উপাচার্যের দুর্নীতির খতিয়ান শীর্ষক কালো বইয়ে উল্লেখ আছে।

তন্মধ্যে, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের বিরুদ্ধে নিজ স্বামী আখতার হোসেনকে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগে ভর্তি, অবৈধ প্রক্রিয়ায় স্কলারশিপ প্রদান, বোর্ড অব অ্যাডভান্স স্টাডিজ ও একাডেমিক কাউন্সিলে নিজের সভাপতিত্বে স্বামীকে ডিগ্রি প্রদানের অভিযোগ রয়েছে।

মেয়াদ পূর্তির আগেই নির্বাচিত সিন্ডিকেট সদস্য অপসারণ, অসম্মানজনকভাবে নির্বাচিত ডিন অপসারণ, সিন্ডিকেট, ডিন অর্থ কমিটি, সিনেট থেকে সিন্ডিকেট প্রতিনিধিসহ মেয়াদউত্তীর্ণ পদসমূহে নির্বাচন না দেওয়া, অ্যাক্ট অনুযায়ী উপাচার্য প্যানেল নির্বাচন তফসিল ঘোষণা না করা, এক বছরের অধিককাল নিয়মিত সিন্ডিকেট আহ্বান না করা সহ আরো অনেক অনেক অভিযোগ রয়েছে।

এ ব্যাপারে ‘দূর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ এর মুখপাত্র ও দর্শন বিভাগের অধ্যাপক রায়হান রাইন বলেন, “এইটা আসলে কোন দূর্নীতির তদন্ত হবে বা হবে না এগুলোর বাছ বিচার করা হয় বলে আমার মনে হয়। তদন্ত করার জন্য যে কমিটি করা হয়েছিল তারা বলছেন যে করোনা মহামারীর কারণে সম্ভব হয় নি। কিন্তু ইতোমধ্যে তারা অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত করে রিপোর্ট দিয়েছেন। এই করোনার মধ্যেই রাজশাহী বিদ্যালয়ের দূর্নীতির রিপোর্ট তারা প্রকাশ করেছেন। জাবির বিষয়ে তারা করোনার দোহায় দিচ্ছেন। এতে বোঝা যায় তাদের যুক্তি সঠিক নয়।"
তদন্ত কি সরকারী মদদে হচ্ছে না? এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এটাকে মদদ বলব না। সরকারের সদিচ্ছার অভাবেই তদন্ত হচ্ছে না বলে আমার মনে হয়। তারা চাইলে তখনই করতে পারতেন যখন অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত করেছেন।

আগামী ২ মার্চ বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলামের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। উপাচার্যের মেয়াদ শেষ হলে এতো এতো দূর্নীতির সঠিক তদন্ত হবে কিনা জানতে চাইলে অধ্যাপক রাইন বলেন, “উপাচার্য থাকা অবস্থায়ই তদন্ত হচ্ছে না। মেয়াদ শেষ হলে তার এতো এতো দূর্নীতির তদন্ত হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই বলে আমার মনে হয়।“


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: